Sunday, June 14, 2020

টুনটুনি:লিমেরিক সংখ্যা










শুভেচ্ছা

পবিত্র সরকার


টিকি ভালো, টাক ভালো, সরু, বোঁচা নাক ভালো,
মাছ ধরা, প্রেমে পড়া — এতে কারও 'লাক' ভালো ৷
আগা ভালো, গোড়া ভালো,
বেশি ভালো, থোড়া ভালো;
ভালো হয় যদি বলি — সকলেই থাক ভালো ৷



আমপান

রেবন্ত গোস্বামী


করোনার এই ছায়ার মাঝেই আসলো ধেয়ে আমপান।
উড়লো কুঁড়ে, উপড়ালো গাছ, ডুবলো যে নাও সাম্পান।
সবাই যখন পর্যুদস্ত 
নিমাইবাবু ধোপদুরস্ত-
মাস্কটা মুখে বেরিয়ে ভাবেন, কোথায় ভালো আম পান !



নিধিরামবাবু

রতনতনু ঘাটী


ইথিওপিয়ার রাজধানী থেকে হাঁটতে হাঁটতে সকালে
এসে বললেন নিধিরামবাবু, 'কেন যে আমাকে বকালে
নাম পাইনি তো অভিধান মেনে ৷
বিনা নামে তাই সকলেই চেনে,
নাম দিয়ে তবে এই সক্কালে এভাবে কেন যে ঠকালে !'



তিনি

অপূর্বকুমার কুন্ডু 


পাগলাগারদ থেকে তিনি ফিরে এলেন সদ্য,
দিব্বি আছেন, নিয়ম করে রাত্রে লেখেন পদ্য ।
সকাল হলেই সাঁকোয় চড়ে,
গলা সাধেন বিকট জোরে, 
পাড়ার লোকে বলেন," ব্যাপার সত্যি অনবদ্য ।"



উপায়

শৈলেনকুমার দত্ত


বেড়ালটা খুব জ্বালায় খালি ওকে ছাড়তে এসে
রাস্তা হারান শিবরামদা অনেকটা দূরদেশে।
বন্ধু শুধান ---'বলেন কী যে !
ফিরে এলেন ক‍্যামনে নিজে ? '
শিবরাম ক'ন--'বিড়ালটার-ই পিছু নিলাম অগত‍্যা সব শেষে!'



মানুষ ও প্রকৃতি

শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ


কোনখানে নেই এতটুকু বিষ হাওয়া জল নয় দূষিত,
প্রকৃতি বলছে,ও মানুষ ভাই, তোমরা সকলে খুশি তো ?
মানুষ বলল, ও প্রকৃতি শোনো,
এতে কেরামতি কারো নেই কোনো-- 
আমরা বাইরে বেরুলে আবার দূষণেই হবে ভূষিত।



আসছে নদী 

সুখেন্দু মজুমদার 


যে যার মত তৈরি সবাই আসলে পরে আমফান 
রাত পোহালে ভাসতে যাবে সঙ্গে নিয়ে সাম্পান 
বাপরে সে কী ছুটল হাওয়া 
নদীতে আর হয়নি যাওয়া 
ঘরের কাছে আসছে নদী খবর দিল রাম পান!



পাখির পিঠে

সুনির্মল চক্রবর্তী


পাখির পিঠে চেপে বসলো খোকা,
দেখল যারা বলল নিরেট বোকা ৷
খোকা বলল মোটেই তা নয়;
উড়তে আমার নেই কোনও ভয়,
সহজপাঠটা পড়ছি — আমি বইয়ের পোকা ৷



দাড়ি

বিমলেন্দ্র চক্রবর্তী


লকডাউনে লম্বা হলো দাড়ি
বর্ণনাটা দিচ্ছি কেমন তারই
বুক ছাড়িয়ে
পেট ছাড়িয়ে
পদতলে দিচ্ছে এখন পাড়ি ৷



রঙিন খুশি

অচিন্ত্য সুরাল


সবসময়ই তোমায় কিছু দেওয়ার ইচ্ছে পুষি
আজকে দিলাম আদরমাখা একটা রঙিন খুশি ৷
রঙিন খুশির দৃশ্যটাতে আঁকা,
বইখাতাতে যা পড়ে যায় ঢাকা...
"সজনেগাছে দোল খাচ্ছে টুনটুনি-মৌটুসি" ৷


পঞ্চপদাবলী

দীপ মুখোপাধ্যায়


ছাতিম গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে, মাতায় দিগ্বিদিককে
তবুও আমি চালিয়ে যাচ্ছি মনখারাপের ভিক্ষে
বাধ্যবাধকতায় থাকি
দুঃখগুলো রাঙিয়ে রাখি
টুনটুনিতে টুনটুনাবে যখন অন্তরিক্ষে ৷



পরিযায়ী

মৃণালকান্তি দাশ 


এতদিন পাখিরাই ছিল পরিযায়ী-
এখন করোনাকালে তারা ধরাশায়ী  ।
খুঁজে খুঁজে লোকজন 
দিয়েছেন বিশেষণ 
তাদেরই, যারাই ছিল সবচেয়ে দায়ী !



ভেজাল

উৎপলকান্তি বড়ুয়া 


ভেজাল আজ টাটকা ও ভালোর অস্থিত্বে
ভেজাল আজ জুড়ে আজ মনোভাব চিত্তে
আলো বায়ু সকলে
সব তার দখলে
ভেজালের বিন্দুটা রূপ নিলো বৃত্তে।



দাদুর টাকে

শচীন্দ্র নাথ গাইন 


চুল ঝরেছে অনেক আগেই, পুরো মাথাই টাক ছিল
সেই টাকেতে তিনটে চড়ুই রং দিয়ে কি আঁকছিল
দাদু রাগে ঘামছিল
বলতে গিয়েও থামছিল
হাত ইশারায় ডাকলো কাদের ? সাতটা পোষা কাক ছিল।  



দাদুর রাজভোগ

অরুণ মন্ডল


রেল বাজারে দাদু কিনতে গেলেন পুজোর গজা 
বিশাল সাইজ রাজভোগেতে আছে জিভের মজা। 
ডজন খানেক খেলেন তিনি
যদিও রক্তে প্রচুর চিনি    
ঢেকুর তুলে মুখটি মুছে আনলেন রসের খাজা।



  থু থু থু 

তু হি ন  কু মা র  চ ন্দ 


ভাবনা পিসি দোক্তা দিয়ে সুক্তো রাঁধেন রাত্রে,
রান্নাঘরের টাঙ্গিয়ে রাখেন পাথরের এক পাত্রে
খাবার খেতে এলেন দাদু
কী রেঁধেছিস থু থু থু
এক গরাসেই ভীষণ ব্যথা সেই থেকে তার গাত্রে ৷



করোনার ভয় 

স্বপন চক্রবর্তী 


ভাইরাস করোনার গতি বোঝা মুশকিল
আন্দাজে তাকে নিয়ে ছুঁড়বে না কেউ ঢিল
আড়ালেই তার বাস
কাকে  যে করবে গ্রাস
সেই ভয়ে ঘরে থাকি দরজায় দিয়ে খিল ৷



করোনাকাল

ফারুক নওয়াজ


বাইরে গেলেই করোনার ভয় তাই থাকি ঘরে বন্দি
জীবন বলছে বাঁচতে হলে তো করতেই হবে সন্ধি।
করোনা কী মানে সন্ধির রীতি..
বোঝে না সে কোনো প্রীতি-সম্প্রীতি
সে তো এক মহা নীরব ঘাতক জীবনের প্রতিদ্বন্দ্বী।



কী বিচ্ছিরি, কী বিচ্ছিরি !

পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়


নামটি কানু, লোকটি ঝানু, দিন করে দেয় রাতকে !
অন্ধকারে সেদিন দেখে চিৎকারে মাত আঁতকে !!
বেঢপ মোটা, মুখের ছিরি—
কী বিচ্ছিরি, কী বিচ্ছিরি !
চাই পালোয়ান, কুস্তি লড়ে করবে তাকে কাত কে ?



বকম বকম

হাননান আহসান 


চিড়িয়াখানায় পশু থাকে কত রকম রকম 
জঙ্গলে তো হরবকতই হচ্ছে কিছু জখম। 
পশুর কিন্তু জীবন আছে
আনন্দেতে জবর নাচে।
পশুর অধম মানুষগুলো করছে বকম বকম।



বাঘের দাবি

সমর পাল


সোঁদরবনে লন্ডভন্ড কষ্টে আছে বাঘরা !
সুখের সংসার ভাঙলো এসে আমপানে দেয় বাগড়া !
বাঘরা এখন চাইছে ত্রাণ
ন‌ইলে তাদের যাবে প্রাণ ----
বাঘের দাবি তাজমহলে থাকবে গিয়ে আগ্ৰা !



মেঘ বলল 

বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায় 


বৃষ্টি  শেষে মেঘ বলল,এবার আমায় আঁকো 
এদিক ওদিক তাকিয়ে শুধোই কোথায় তুমি থাকো ?
এই তো ছিলে মাথার পরে 
চললে আবার তেপান্তরে 
খাতার পাতা ভিজিয়ে দিতে কেন এমন ডাকো ?



কারণ-বারণ

স্বপনকুমার রায়


হরেন দাসের মেসোর ছেলের সাড়ে ন'হাত কান
গিনেস বুকের প্রথম পাতায় নাম-খানা তাই পান।
নয়তো আজ আর বলতে বারণ
এমন কানের কিই-বা কারণ,
ইসকুলেতে স্যাররা রোজই দিতেন জোরে টান।



সর্বগ্রাসী

সৌম্যেন্দু সামন্ত


মাটিটুকু ছুঁয়ে মাথা তুলেছিলো ছোট-বড় যত ঘর—
তারা তো দ্যাখেনি, ভাবেওনি ভুলে ভেঙে যাবে চরাচর !
একদিকে ভাইরাস
আরদিকে ঝোড়ো-ত্রাস...
সব গিলে খাবে বিশ্বক্ষুধায় মানুষকে পরপর !



কাজি সমাচার

স্বপন প্রধান


কাজিরাঙা জঙ্গলে আছে এক কাজি রে !
টাকা পেলে "হ্যাঁ-জি" বলে, ব্যাটা খুব পাজি রে ৷
থাকবে না জঙ্গলে,
জমি কেনে মঙ্গলে;
ঝেড়ে-ঝুড়ে সবকিছু পাড়ি দেবে আজই রে ৷



পরিযায়ী 

সুব্রত মাইতি 
 

ঘরের ছেলে ফিরবে ঘরে এ-কথা তো জানা,                         
ট্রেনে ট্রেনে বাসে বাসে দলে দলে আনা ৷                   
স্কুলবাড়িটা কোয়ারেন্টিন,              
ল্যাট্রীনটা কী ঘিনঘিন !              
পেটের জ্বালা পেটায় থালা আমফান-তুফান হানা ৷



রমেনবাবু

পার্থপ্রতিম আচার্য


রমেনবাবু বাসেন ভালো চড়তে হাওয়া গাড়িতে, 
ভর দুপুরে আয়েস করে হাত বোলাতে দাড়িতে।
থাকেন যখন দার্জিলিংএ--
আপেল কেনেন চার শিলিং এ;
বার্সেলোনার স্বপ্ন দেখে ছোটেন শ্বশুর বাড়িতে।



ডাক্তার শ্রীনিবাস

বিনয় দেব


ডাক্তার শ্রীনিবাস গিয়েছেন সাইরাস,
পথে ঘাটে দেখলেন কোনোখানে নাই rush।
ফিরলেন চিন হয়ে
সযত্নে দেহে বয়ে
পরম করুণাময় শ্রীকরোনা ভাইরাস !



ডলফিন 

মাথুর দাস


বিকেল বেলায় দেখি যে লেক  পুষ্করে,
ডলফিন এক উঠলো ভেসে ভুঁস্ করে !
শুশুকটি তো মানুষ ঘেঁষা
ভালোই বাসে  মেলামেশা,
আদর করে  দাও না তাকে  খুশ্ করে ।



তেল

সুবীর ঘোষ


তেল দিও না পায়ের নীচে তেল দিও না নাকে
তেল দিও না রাস্তাঘাটে ফালতু যাকে তাকে
 মাছ ভেজে নাও মাছের তেলে
এক ফোঁটা তেল কয়েতবেলে
তেল দিও না গৃহদাহে তেল দিও না টাকে ৷



টুনটুনি

সবিতা বিশ্বাস


করোনা-কালে গাছের ডালে ছোট্ট এক টুনটুনি
লেজটি তুলে খানিক দুলে গাইছে গান গুনগুনি
মানুষ শোনো একটি কথা
প্রকৃতি প্রাণে দিয়ো না ব্যথা
ফিরিয়ে দেবে আঘাত সে যে হিসেব কষে কর গুনি।



করিৎকর্মা

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


নেচে নেচে হাই তোলে মণিলাল শর্মা
ছুটি পেলে ছুটে যায় বন থেকে বার্মা
হাসি পেলে জল খান
কান্নাতে বাসি পান
খেয়ে শুয়ে দিন কাটে কী করিৎকর্মা !



বাঁচতে গেলে

শুভাশিস দাশ 


সময়টা তো বড্ড কঠিন ভাইরে 
বাঁচতে গেলে লড়তে হবে তাইরে 
করোনা  আম্পানে 
মারছে ধনে জনে 
নয় রে ভাষণ , রেশন শুধু চাই রে ৷



আমপান

শঙ্খশুভ্র পাত্র


প্রবল গতিতে যেই ধেয়ে এল আমপান
হো হো করে হেসে ওঠে আমাদের রাম পান
বলে, লগডাউনে
ঝড় হোক টাউনে,
তাহলে যে বেঁচে যাবে ভিলেজের আম, পান ৷



দূষণ

অবিনাশ আচার্য


প্রতিদিন প্লাস্টিক' নয়া কালচার
নয়া এক সংকট আধুনিকতার
নদনদী জলাশয় 
প্লাস্টিক বর্জ্যয়
ভরে গিয়ে বেড়ে চলে দূষণের হার।



টুনটুনি গুণ শুনি

অজিত ত্রিবেদী 


টুনটুনি গুণ শুনি খুব যে তোমার 
লিখেছেন উপেন্দ্র নয় তো হোমার 
যায় না তোমায় দেখা                                          
তাই তো হয় না লেখা 
কারণটা জানি নয় যোগ্য ক্ষমার !



টুনটুনি

মৃত্যুঞ্জয় দেবনাথ


ও টুনটুনি,তোকে বলি,শোন —
শঙ্খদাদার তুই কে হোস ? মেয়ে ? নাকি বোন ?
শুনে হাসিস ফিকফিক,
হাসলে চাঁদের ঝিকমিক —
সেই হাসিতেই ভরে উঠুক ছড়ার প্রাঙ্গণ ৷



আমফান

স্বপনকুমার বিজলী


এসে গেছে "আমফান" "করোনার" সাথে
হু -হু করে ঝড় নিয়ে ঠিক সাঁঝ-রাতে
অনাহারে কুঁড়ে ঘরে
চাপা পড়ে লোকে মরে
অনাথের পাশে থাকো হাত রাখো হাতে ।



খবর

সঞ্জয় কর্মকার 


মস্করা নয় ভূতকে নিয়ে আটটা- নটার মজলিশে 
দিব্যি আছে এক জোড়া কান শুনছে কথা ফিসফিসে
কার ঘরে কে করছে চুরি 
ঘুষ খেয়ে কে বাগায় ভুঁড়ি 
খবর রাখে জবর যত হুঁশ যে  ওদের দশ দিশে।



পাড়ার হরি

নির্মল করণ 


পাড়ার হরি যখন দিল গান-চর্চায় ডুব 
সুর লয় তাল ছন্দ নিয়ে হামবড়াভাব খুব
ক্লাবে যেদিন ধরল গান 
হাত দিয়ে সব চাপল কান।
গানের কথায় এখন হরি এক্কেবারে চুপ ।



আঃছিঃ

শংকর দেবনাথ 


সুন্দর বন ছিল - মন ছিল তৃপ্ত-
চঞ্চল নদী ছিল- বোধি ছিল দীপ্ত।
নদী-গাছ পর করে
স্বপ্নের ঘর করে-
ধিন-ধাগে নাচি সুখে -আঃছিঃ সুখে লিপ্ত।



আমপান নাকি উমপুন

মানস প্রধান


নামটা কী তোর ? আমপান নাকি উমপুন ?
আদুরে নামে মাফ হবে নাকি সাত খুন !
তাকিয়ে দেখতো চারধার
কেমন করলি ছারখার
তোর জন্য সাজিয়ে রেখেছি ভুসোকালি আর কলিচুন ৷



হঠাৎ ডাকাত

বিকাশ পণ্ডিত


গামছা কাঁধে ভুবন খুড়ো যাচ্ছে খাটে রাতে
দশটা কুকুর, সাতটা বেড়াল চলেছে তার সাথে
হঠাৎ ডাকাত ধরলো ঘিরে
খুড়ো বলেন, বৎস ধীরে;
এগিয়ে এলে পোষ্যগুলো কামড়ে দেবে হাতে ৷



লম্বা মজার গজা

মোস্তাফিজুল হক 


ভাজছিল মা লম্বা মজার গজা,
না চেখেই তা লাগলো দারুণ মজা !
ফেলেও দিলাম লোল,
পাড়ায় পিটলো ঢোল-
নাতির নাতির তালুইতো ভাই ধ্বজা !



আনন্দফুল

জয়শ্রী সরকার


সবার এখন একই কথা রাজনীতিটা পরে
মরছে মানুষ যত্রতত্র প্রায় প্রতিটি ঘরে ৷
দুর্গতদের পাশে থেকে
জীবনটাকে নাও গো দেখে
হাসলে সবাই আনন্দফুল ফুটবে ঘরে ঘরে ৷



বুলবুলিতে ধান খেয়েছে

রণজিৎ হালদার


বুলবুলিতে ধান খেয়েছে চুলবুলিতে কান
ঘুলঘুলিতে ব্যাঙের বাসা, ভুলগুলিতে প্রাণ...
টুনটুনিতে টুনটুনালো
ঝুমঝুমিতে ঝুমঝুমালো
ফুলগুলিতে মৌমাছিরা গুনগুনালো গান ৷



মহৎ কর্ম

নিতাই মৃধা


পরহিতে জীবনপাত অতি পরম ধর্ম,
বুদ্ধিমানে চিরকাল বুঝেছে তার মর্ম।
স্বদেশ সেবায় বাবলু জানা
পেয়েছেন ফল ষোল আনা।
এক বছরে ফিরল কপাল এমন মহৎকর্ম।



ফারাক

তামস চক্রবর্তী 


দামি দামি খাবার আসে নেতা-মন্ত্রীর পাড়ায় 
মাংস কষা বিরিয়ানি ওদের থালায় মানায়,
গরীব খাবে রেশন খাবার
সাধ্য কি আর ওসব পাওয়ার
দুইয়ের মাঝে এই ফারাকই গণতন্ত্রে মানায়।



ভাল্লাগে না

মনিকা চক্রবর্তী


 'করোনা, করোনা' — আর কোরো  না ভাই,
 ভাইরাস-টাইরাস  ভাল্লাগে না ছাই,
 প্রাণ ভরে শ্বাস নি
 জীবনকে ভরিয়ে দি
 কতদিন আর চলবে বিচ্ছিরি সব  কাই মাই।।



এ কী শুনি !

বিনয়েন্দ্রকিশোর দাস


পার করে দিলি ভাই বয়স তো পঞ্চাশ
অফিস করেও আছে ধান টন টন চাষ,
তুই কত গুণী
তবু একী শুনি !
রোজ রোজ কনে দেখে লাখ টাকা পণ চাস্ !'



ঘুমের ঘোরে

বাসু দেব নাথ


খেলতে ভীষণ ইচ্ছে করে মেঘের গায়ে ভেসে ভেসে
কিম্বা ছুটে নদীর পাড়ে ফোকলা দাঁতে হেসে হেসে
যায় ছুটে যায় মন
ওই যে দূরের বন
মন ছুটে যায় ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে দেখা দেশে দেশে।



নেতা

আলম সিদ্দিকী


নেতাটেতা নয় সে তবু নেতার মতো ভান করে 
ফাঁকা মাঠে একা একা মনের সুখে গান করে
অনাবশ্যক 'ফান' করে
লোকদেখানো দান করে
ভালো হতে বললে কিন্তু কঠিন অভিমান করে।



খোকনসোনা লক্ষ্মীসোনা

সৈয়দ মাশহুদুল হক  


খোকনসোনা লক্ষ্মীসোনা আছ কেন চুপ ?
চেয়ে দেখ ঐ আকাশে মেঘের কত রূপ।
আকাশ হয়ে উপুড় 
ঝরছে টাপুরটুপুর 
বৃষ্টিজলের ছোঁয়ায় পাতা — আহ্লাদিত খুব ৷



আম কুড়ানি খোকা

স্বপন শর্মা


আম পেয়েছে শাপলা কানু, আম পেয়েছে খোকা ৷
কামড় দিয়ে দেখছে এ কি ! আমের মাঝে পোকা !
কেমন লাগে এমন হলে
মানুষ জনে কী সব বলে
খোকন বুঝি আম না পেয়ে হয়েছে আজ বোকা !



লোকটা

প্রাণনাথ শেঠ


লোকটা পাজির পা-ঝাড়া যাকে বলে রাম বিচ্ছু,
পরের পেলেই সবটা খায় ছাড়ে নাকো কিচ্ছু ।
সকাল-সন্ধ্যা সেই লোকটা—
পানের সঙ্গে খায় দোক্তা,
বলে, যদি বেচাল করো ছাড়বো নাকো  পিচ্ছু ৷



লিমেরিক

এয়াকুব সৈয়দ


মক্কা ফেরত আশিক মিয়া ঘুরেন গাঁয়ে গাঁয়ে,
যখন তখন মুরিদ করান ডানে কিংবা বাঁয়ে ৷
গাঁজা আফিম তামাক পাতায়,
জ্ঞান যে হারায় নেশার মাথায়;
সেদিন দেখি আটক তিনি কু-কর্মের দায়ে।



ভয়

কৌশিক দে সরকার। 


খাঁকি ক্যাম্পবেল পার পিস পঞ্চাশ টাকা
প্রতিদিন মরে কিছু খামার হয় ফাঁকা 
লকডাউন শুরু হয়
বেঁচে থাকে এক ভয়
স্বজনহীন একটি হাঁসের প্যাঁক প্যাঁক ডাকা।



এসে বঙ্কা , বাজায় ডঙ্কা

অভিজিৎ দাশ


এসে বঙ্কা , বাজায় ডঙ্কা , শঙ্কা লাগে ভারি
হল কীরে , এত জোরে ? বল্ না তাড়াতাড়ি  । 
রেগে ভারি আগুন বাবা
বুঝবি কি তুই , ওরে হাবা
ছুটে এসে দেবেন কষে , থামা বাড়াবাড়ি। 



ভালোবাসা

রিয়াদ হায়দার


দূর আকাশে মেঘের ভেলা মন জুড়ে আজ বৃষ্টি
সারাটা দিন কাটবে ভালো দিনটা বড়ো মিষ্টি
হৃদয় দিয়ে বাসবো ভালো
জীবন জুড়ে জ্বলবে আলো
তোমার-আমার ভালোবাসা ভগবানের সৃষ্টি !

 

বিদ্বেষের দেশ

তপোময় ঘোষ 


এই যে ধরো আমেরিকা,উন্নত এক দেশ।
সেখানে ভাই আজও দেখি বর্ণভেদে দ্বেষ।
গায়ের রঙে,সাদা কালোয় 
ব্যবহারের মন্দ ভলোয় 
কি দ্বন্দ্ব অহর্নিশি । ঝামেলার একশেষ ।



ভূমিকম্প

চন্দনকৃষ্ণ পাল


ভূমিকম্পের ভয়ে তার দিন-রাত্তির কাটে না
হাইরাইজ-এর পাশ দিয়ে সে ভুলেও আর হাঁটে না
এখন থেকেই সাবধানী সে,
নজর রাখে সব জিনিসে,
লোককে বলে, ভূমিকম্প, আমার ক্ষেত্রে খাটে না ৷



কোঁকর কোঁ

অজিত কুমার কর              


ডিম ফোটেনি তবু শুনি খোলের ভেতর কোঁকর-কোঁ
ব্যাপারটা তো ভারি মজার আমের ভেঁপু পোঁপর-পোঁ!
আমটা এখন দুলছে গাছে
মোরগও নেই এখন কাছে
রহস্যভেদ করার আগেই নাতনি এসে মারলো ছোঁ।



বাজবে রণের দামামা

রেবেকা ইসলাম


বাবা বললেন, চ্যাঁচাস না আর স্বরটা গলার থামা মা
অনেক হলো গলার সাধন অনেক সা, রে, গা, মা, মা।
নেতা মশাই পাশের ফ্লাটে
ঘুমিয়ে আছেন টাকার খাটে,
কাঁচা ঘুম তাঁর ভেঙে গেলে বাজবে রণের দামামা।



মোকাবিলা

আবু সাইদ কামাল


বিশ্বজুড়ে ভাইরাসের  কি বিচিত্র লীলা !
জীবনঘাতী এই ব্যাধিকে দেবে কি কেউ ঢিলা ?
করোনা জ্বর চাপছে ঘাড়ে 
প্রতিরোধ আর প্রতিকারে
বিশ্ববাসী অটুট থেকে করবে মোকাবিলা।



ছোট্টসোনার ইচ্ছে

দিলীপ কুমার বাগ


ছোট্টসোনার ভালো লাগে না রাতের আঁধার
আলোর রাজ্যে চায় যে যেতে টপকে বাধার
কান্না নয়, চায় সে শুধু মিষ্টি হাসি
মিষ্টি রোদের রামধনু-রং রাশি-রাশি
তারই সাথে ভালোবাসা মা-বাবা আর দিদি-দাদার ৷



অচিনপুরে

অজিত রায় ভজন। 


আমি যখন চিতা-য় শুয়ে হচ্ছি পুড়ে ছাই,
তখন জানি আমি তোমার চিত্ত জুড়ে নাই? 
আমায় ছাড়া সময় খানি,
কাটবে সেটা কেমন জানি? 
তোমায় ছেড়ে আমি এখন অচিনপুরে যাই।



স্যুট হলো না

অরূপ শান্তিকারি


কেষ্টপুরের কিষ্টপদর পাক ধরেছে কেশে
কমবয়সে এমন হাল দেখছে সবে হেসে
পক্বকেশে লাগায় কালি
দেখতে হলো বয়স হালি 
স‍্যুট হলো না মাথার কালি মরছে কেশে কেশে ৷



বরাত গেল খুলে   

জয়শ্রী কর


কদমগাছে ঠ্যাং দুলিয়ে গাইছে দাদু গান 
উকুন খেতে পাখপাখালি দিচ্ছে চুলে টান। 
দাদু বলে দাও না তুলে 
যাবে তবে বরাত খুলে 
তেলের খরচ যাবে বেঁচে নাপিত ধরে কান!



চীনা রাজা

শিবুকান্তি দাশ


চীন থেকে এলো রাজা কিংজিংটিং
খায় না সে কোন কিছু নাচে ধিনধিন ৷
মন হলে গায় গান—
চুং চাং চিং চাং...
তাই শুনে মাথা নাড়ে হাট্টিমাটিম ৷



শেষকালে

সোমনাথ প্রধান


কী খাব কী খাব ভেবে  ছিল নাকি দ্বন্দ্বে সে
শেষকালে বেশ সারল ভোজন আড়াই কিলো সন্দেশে !
তারপরে তার বাক্যিগুলো
মিষ্টি হয়ে এমন ছুঁলো
পিঁপড়ে এসে কানের ভেতর কাটলো কুটুস ছন্দে সে !



আড়ি

ত্রিদিব ঘোষ রায়


রাগ করেছে আকাশ মুখ যে তার ভারী
টপটপাটপ পড়ছে চোখের জল তারই
রাগ করেছো বটে
বুদ্ধি তো নেই ঘটে
আমরা তাই করছি তোমার সাথে আড়ি ৷



লগডাউনে

অষ্টপদ মালিক

           
কতকাল থাকবো বলো ঘরে বসে বসে ?
পড়াশোনা খেলাধুলা পড়ল সবই ধ্বসে !
সব লোকে মুখোশ পরে
পথে-ঘাটে নিজের ঘরে
লকডাউন এ বুকের পাঁজর যাচ্ছে যেন খসে !



শীত কাতুরে 

চন্দন চক্রবর্তী 


হাড়হিম-করা শীত পড়েছে, পাই না খুঁজে দিশে ৷
ভাবছি এবার অফিস যেতে চান করব  কীসে !
গা কাঁপে ঠক্ ঠক্ 
বুক কাঁপে ধক্ ধক্ 
মরব এবার নাইতে গিয়ে ঠাণ্ডা জলের রিষে ৷



বৈয়াকরণ

শৈলেন্দ্র হালদার


পাণ্ডিত্যে তুখোড় তিনি, সন্ধি-কারক-সমাসে—
ব্যাকরণেই বিগলিত-অশ্রু রাখেন জমা সে,
গোল্লা পেয়ে পরীক্ষাতে—
হৃদয় দিলেন কাব্যখাতে,
আধুনিক এই পদ্যে-টড্যে দেন না দাঁড়ি, কমা সে ৷



এসব দিয়ে 

প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল 


দিনের আলো থমকে গেলে আসে  রাত 
খিদের সাগর পেরিয়ে এলে ফোটে ভাত
কথার ডালি ফুরিয়ে এলে চুপ
বুক পুড়িয়ে গন্ধ ঢালে ধূপ 
এসব দিয়ে চিনবে তুমি সঠিক মানব জাত।



ঘরবাড়ি-তাম্বুল

রাজকুমার খাটুয়া


আমপানে খাবি খায় আম,পান,জামরুল
আম-জনে খায় শুধু দাদাদের রাম-গুল,
'তাহাদের' নীতিতে
করোনার ভীতিতে
রাম জানে,কবে পাবো ঘরবাড়ি-তাম্বুল !



দেশে ফিরেই

নিরঞ্জন মণ্ডল


একখানা মেঘ হঠাৎ যদি হাতের মুঠোয় পাই ৷
তার পিঠেতে সওয়ার হয়ে তেপান্তরে যাই,
রাজকন্যার ঘরে গিয়ে
ঘুম পাড়ানোর কাঠি নিয়ে
দেশে ফিরেই করোনাকে ঘুম পাড়াতে চাই ৷



করোনানিধি, স্বাস্থ্যবিধি

সুভাষ প্রসন্ন ঘোষ


চলছে এ দেশে আজ করোনার উৎসব,
ঘরে বসে সারাদিন হ'য়ে গেছি ভূত সব !
করোনার নাম গান, 
শুনে শুনে হয়রান,
বারবার হাত ধুয়ে দূর করি খুঁত সব।



পকেট ফাঁকা

মিঠু মণ্ডল


আকাশ পাখি, হলুদ ডানা, আকাশ কোঠায় ঘর
চিন্তা বড়ো, মেয়ের বিয়ে,বিলেত ফেরত বর
খরচা অনেক, লাগবে টাকা
লকডাউনে পকেট ফাঁকা
বেচতে হবে আকাশটা তাই ভাবছে দেবে দর।



যারা কেঁদেছিল

প্রবীর ভৌমিক


মা-যে কোথায় হারিয়ে গেল কেউ  রাখেনি খোঁজ,
অবোধ শিশুর চোখের জলে মাটি ভেজে রোজ রোজ  ৷
ভোর হয়, পাখি ডাকে—
ফুল ফোটে নব শাখে,
যারা কেঁদেছিল কালি ও কলমে, তারাও আজ নিখোঁজ ৷



বড়োবাবু 

তাপস বাগ 


বড়োবাবু খাটিয়াতে বসে বসে পান খায় 
দারোয়ান মাথা টেপে দুলে দুলে গান গায়। 
আরামেতে হাই ওঠে 
ফুলো-মুখে হাসি ফোটে 
চুপিসারে চুরি করে নিশি চোর চলে যায়। 



আঘাত

কিশোর কুমার দলাই


 ঢং  ঢং ঘন্টা ভীড় ঠেসাঠেসি
১২টা বাজতে বাকি নেই বেশি ৷
মাথায় পড়লো হাত
হতে হবে কুপোকাত
আাঘাত হেনেছে ঠিক ঐ চীনদেশী।



'আম পান'

ডি কে পাল


কাঁদলেন,কাঁদালেন,ছাড়লেন — আম্পান,
ধ্বংসের মহারোষে,মহাঝড় নাম পান;
প্রলয়ের তাণ্ডবে,
জান-ঘর,মান ডোবে;
পরিশেষে কেঁদে-হেসে চাষীবলে আম পান।



নির্লোভী

চৈতালি মজুমদার


ও পাড়ার হীরুকাকু খেয়েছিল ভুজিয়া,
তার সাথে খেয়েছিল এককিলো গুজিয়া ৷
ঘোরে মাথা বনবন
পেট করে টনটন
লোভ করা ছেড়ে দিল সবকিছু বুঝিয়া ৷



টুনটুনিতে টুনটুনালো

অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়


টুনটুনিতে টুনটুনালো লিখতে লিমেরিক
বিষয় কিছু বলছি নাতো নিজেই করো ঠিক
লিখতে ইতিহাস
করোনা সন্ত্রাস
টিভির খাতায় বন্দি হয়ে খুঁজছি দিক- বিদিক। 



লিমেরিক

অরিন্দম ঘোষ


আমার পাড়ার নন্দ ঘোষের নন্দিনী যে,
সারাটা দিন আঁটছে বসে ফন্দী নিজে,
রান্না করে, রুটি সেঁকে,
উনুন আঁচে যাচ্ছে বেঁকে,
বেঘোরে প্রাণ হারিয়ে না যায় কোনদিনই যে।



শরত আকাশ

অলোক কুমার প্রামাণিক


ধানের খেতে শীষটি তুলে হাসছে নতুন চাষ
বিন্দু-বিন্দু শিশির ফোঁটায় সাজছে সবুজ ঘাস
শিউলি গাছে ফুল
দুলছে দোদুল দুল
খালে-বিলের পাড়ে-পাড়ে চামর নাড়ে কাশ ৷



ধুকু-পুকু

অলোক কুমার ভট্টাচার্য্য


ধুকু আর পুকু যমজ — পুকু ওঠে ভেংচিয়ে,
ভীষণ রাগেতে বলে — আমারই তো গেঞ্জি এ
ধারে খেয়ে মিষ্টি — গৃহবন্দি ধুকু,
মার খেয়ে দোকানির চিল্লায় পুকু —
স্রেফ তুই খেলি ল্যাংচা, আমি চলি লেংচিয়ে ৷



দেশপ্রেম

আবুবকর সালেহ 


বেকার জীবন অভিশাপের, দেশের মায়া হার মানে
পেটের দায়ে ঘেটে বেড়াই দুবাই কাতার জার্মানে
স্বপ্ন তবু দেয় না ধরা
খাচ্ছি ধুয়ে লেখাপড়া
দেশের শাসন দেশের আসন মিথ্যে ভাষণ তার মানে। 



সেই পাখিটা

আভা সরকার মণ্ডল


সেই পাখিটা তিতির নামে
বর্ষা এলে শুধুই ঘামে
ডিমটি পেড়ে
নজর কেড়ে
বিক্রি হয় সে চড়া দামে ৷



বেটা নাকি !      

কৃষ্ণ চন্দ্র সরদার


ঝটপট ধেয়ে আসে আমপান
তাই দেখে মন করে আনচান
ভাঙবে সে ঘর বাড়ি
দুয়ো দেব, দেব আড়ি
বেটা নাকি খুব বাজে , শয়তান !



ই-ঈ

ছোটন গুপ্ত


সহজ পাঠের সেই দুটি ভাই  হ্রস্ব-ই এবং দীর্ঘ-ই ।
মা-কে শুধাই এখনও পায় বসে খেতে ক্ষীর- ক্ষই?
প্রাণের ঠাকুর একটু শোনো…
ভাত নেই আজ ঘরে কোনো–
এই বাংলায় লক্ষ শিশুর নিদ আসে না আজও ক্ষুধার্তই।।



সূর্য কথা

দয়াময় পতি


আকাশের বুকে দেখি সূর্যটা জ্বলে,
তার আলো পেয়ে দিন কাটে কোলাহলে।
ইন্ধন আছে কি না,
কী যে হতো তাকে বিনা!
মানুষ অবুঝ তাই কটু কথা বলে।



বুড়ো

দীনেশ সরকার


চার কুড়ি দশ পার করেছে বদ্যিনাথের খুড়ো
দাঁত-কপাটি অটুট আছে, চিবোয় মাছের মুড়ো ৷
লাঠি ছাড়াই সোজা হাঁটে
জন-মজুরের সাথে খাটে
দেখলে তাকে যায় না বোঝা হয়েছে সে বুড়ো ৷



আকাশ জুড়ে

দুলাল সরকার


আকাশ জুড়ে পেজা তুলো বিছিয়ে বিছানা
কোথায় থেকে কোথায় যায় নেই ঠিকানা
কত জলকণা আর ধুলোর রাশি
যত ভাবনা ততই পায় যে হাসি
খুশি মতো চলে তারা মানে না কোনো মানা ।



ঝিলমিল

দেবেন্দ্র নাথ সরকার


খুঁজে খুঁজে হচ্ছিলাম তোলপাড়
এক-এক ফুলের এক-এক বাহার
এ-পথে নেই, ও-পথেও নেই
ক্লান্তি নিয়ে নাইতে গেছি যেই
ঝিল-এর সঙ্গে মিল পেয়েছি তার ৷



পিটার প্যান 

প্রদীপ কুমার পাল 


পরী দেশের পিটার প্যান , চেনোকি তোমরা তাকে ?
বয়েসটা তার বাড়েই না আর চির – খোকাই থাকে ৷
 হঠাৎ হঠাৎ মনের টানে
বেরিয়ে পড়ে অভিযানে
করতে লড়াই হুকের সাথে,"লস্ট বয়"-দেরও ডাকে ৷



টহল

বদ্রীনাথ পাল 


হারু ঘোষের  গোয়াল  থেকে  দশটা গরু যেদিন-
হাপিস হলো  নিশুত রাতে একে একে  সেদিন,  
বললে হারু থানায়  গিয়ে-
"কে পালাতো  গরু  নিয়ে-
বড় বাবু  মোর গোয়ালে টহল দিলে  এ দিন !"



মেঘদুপুরের ডাক

বিশ্বজিৎ অধিকারী


দুপুরবেলাই গা ছমছম, আকাশ গিয়েছে ঢেকে
চেতাবনি দেয় শঙ্কার মেঘ হুঙ্কারে হেঁকে হেঁকে।
থমথমে ভাব গাছগাছালির
থরথর ঘর-গেরস্থালী
একটি আকুল পাখি উড়ে যায় কাকে যেন ডেকে ডেকে।



বুক-ভাঙা ঝড়

মিন্টু প্রামাণিক


রোজ সকালে দরজি পাখি টুনটুনি,
মিষ্টি সুরে গান গেয়ে যায় — গান শুনি ৷
টুনি গাইছে না আর গান,
তাকে খেয়েছে আমফান;
বাজছে বুকে করুণ সুরের ঝুমঝুমি ৷



আন্না মালাই

রাজীব মিত্র


যখন তখন বায়না জুড়ে কাঁদতে বসে আন্না মালাই
বরফ খেতে ইচ্ছে হলেই আমায় বলে আন না মালাই। 
কুলফি বা হোক অন্য কিছু
ছাড়বে নাকো মোটেই পিছু
শুধুই ট্যাঁকের পয়সা খরচ তাইতো দেবার নেইকো বালাই। 



মোম্বাসার মমতাজ

মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় দাস


মোম্বাসাতেই মোমের বাসাটা মমতাজ বানু বানিয়ে
মাফলারে মুড়ে গলাখানা তার বসে অলিন্দে চা নিয়ে৷
সন্ধে কাটায় একাকী,
ভাবে মনে, 'কারো দেখা কি
আজ পাবো ?' তবু কেউ তো আসে না লিখে লিমেরিক তা নিয়ে৷



অবাধ্য এই দু'চোখ

শক্তিপদ পণ্ডিত


অবাধ্য এই দু'চোখ আমার চায় যেতে যদ্দুর
নেই তো মানা হোক না তবু টলটলে রোদ্দুর
মৌরী ফুলের গন্ধ মাখা
উদাস দুপুর লাগছে ফাঁকা
উথাল পাথাল ঢেউ খেলে ওই সামনে সমুদ্দুর ৷



সাবাশ

শক্তিপ্রসাদ  ঘোষ 


কোচবিহারের নিধিগোপাল দাস 
রাস্তার ব্যারিকেটে লাগান বাঁশ 
মুখে মাস্ক  লাগিয়ে 
গ্লাভস হাতে বাগিয়ে 
চেঁচিয়ে বলেন তিনি সাবাশ সাবাশ। 



গানের গুঁতো

শিবপ্রসাদ ভৌমিক


মধু খেয়ে মধুবাবু গলা সাধেন বসে
সা রে গা মা পা ধা নি মন দিয়ে কষে 
চিল চিৎকারে
নেই কেউ ধারে
গান শুনে গুঁতো মারে কালো এক মোষে ।



দেখবো জগৎ

সজল বন্দ্যোপাধ্যায় 


ইস্কুলেতে যাবো না আজ লেখাপড়া বন্ধ 
ঘুরবো শুধু বন-বাদাড়ে মেখে সবুজ গন্ধ 
বন্য হয়ে খেলবো বনে
বন্য গন্ধ মাখবো মনে 
দু'চোখ জুড়ে দেখবো জগৎ হবো না যে অন্ধ !



কীসে ?

সনৎকুমার দাস


গোপাল হারুন হাসান সুরেন সবাই আছে ত্রাসে,
এ-দেশ ও-দেশ সব দেশেতেই এখন তারই গ্রাসে ৷
কোন্ অচিনের মৃত্যুবাণ,
কেড়ে নিচ্ছে নিযুত প্রাণ !
ভেবেও মানুষ পায় না এখন — বাঁচবে সবে কীসে ?



জান নিয়ে টানাটানি

সমরকুমার চট্টোপাধ্যায়


করোনা আর আমফানি জান নিয়ে টানাটানি করছে,
কেউ গাছ চাপা পড়ে, কেউ বা করোনা-জ্বরে মরছে,
নেই বাড়ি নেই ঘর, মাঠে মরে ধান খড়,
আলো জল খাদ্য সব নিয়ে গেছে ঝড়
চলে ত্রাণ নিয়ে লুকোচুরি,গরীবের চোখে জল ঝরছে ৷



সর্ষে-মাহাত্ম্য

সুপ্রকাশ আচার্য


সর্ষে বাঁধা যাদের পায়ে, তারা কি আর থাকবে ঘরে,
বেরিয়ে পড়ে বুলন মাঝি সন্ধ্যা বেলার ট্রেনটি ধরে,
রাত্রি তখন প্রথম প্রহর
ট্রেন থামল বেগুন কুদর,
সর্ষের মধ্যে ভূত ছিল যা নামায় তাকে গায়ের জোরে।



থমকে গেল

সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়


যারা দু'হাতে পাহাড় ভেঙে, গড়েছিলো পথ
উড়িয়ে ধুলো সেই পথে, ছোটে যন্ত্র-রথ
 কাজ হারিয়ে সেই পথ দিয়ে
আজকে তারা ফিরছে গৃহে
থমকে গেলো সেই পথেই, জীবনেরই রথ। 



 সত্যি ফুলের কুঁড়ি

সেখ মনিরুল ইসলাম


ফুল ফুল ফুল, ফুলের মেলা  গাছ যেন ফুল ঝুড়ি   
ফুলের সাথে হয় তুলনা? কেউ হবে তার জুড়ি?
শিশুর দল খেলছিল
পাপড়ি মনের মেলছিল      
ফুল বললো আমার কাছে সকল শিশুই কুঁড়ি । 



ভূতের ছানার শখ

স্বপ্ননীল রুদ্র


শখ হয়েছে ভূতের ছানার মাংস খাবে পাঁঠার
ভূতের মাতা চলল বাজার কিনতে আমুল বাটার
শ্যাওড়া গাছের পাতা বেটে
মাংসে মেখে পেঁয়াজ কেটে
বাটার দিয়ে রাঁধবে রাতে রান্নাঘরে ওঝার ৷



এই "করোনা"

সুজন সাজু 


এই "করোনা" বুঝিয়ে দিলো ছাড়ো তোমার গর্ব,
এক নিমেষেই করতে পারে দম্ভটাকে খর্ব, 
হিংসার যত আগুন আছে
সহনশীলতার না গুণ আছে
ওসব ছেড়ে হও রে মানুষ পরিপূর্ণ সর্ব।



রংধনু

শাহীন খান 


আঁকতে পারে খোকন সোনা নদনদী বন পাহাড়
মনের মাঝে উঁকি মারে  ছড়া কমিকস তাহার
ফুল পাখিদের ভালোবাসে
চন্দ্র দেখে মুচকি হাসে 
বুকের ভেতর ঝলকে ওঠে রংধনু রং বাহার। 



ঝড় 

মজনু মিয়া 


জন মেরে ধন কেড়ে শেষে 
ঘর হারা পাগলের বেশে 
কূল গেল মূল গেল, 
জীবনে কি পেল ?  
বাঁচি তবু আশাতে যে হেসে।



অস্ফুটন

টুম্পা মিত্র সরকার


হয়নি আঁকা ঝরনা নদী বন পাহাড়ের ছবি ৷
মণ্ডুকতায় সাজিয়ে রাখি বেবাক জীবন সবই ৷
নীরবতার ঘেরাটোপে
আঁধারেতে মনটা সঁপে
ছন্দ খুঁজে হলাম সারা ইচ্ছে হবোই কবি ৷



ঝড় এলো রে

পঞ্চমী গোল


ঝড় এলো রে,ঝড় এলো রে,ঝড় এলো রে ঝড়
ছাইলো আকাশ মেঘে হঠাৎ বাজ পড়ে কড় কড়
ধুলো বালি নেয় উড়িয়ে
বৃষ্টি আসে পাল্লা দিয়ে
আওয়াজ খানা আসছে বিকট গাছ ভাঙে মড়মড় ।



কড়কড়ে বাজ

 সুশোভন সাহা


আকাশ জুড়ে কালো মেঘের দল জুটেছে আজ
পাগল হাওয়া দিচ্ছে হানা র‌ইল প'ড়ে কাজ
ছাতের 'পরে বৃষ্টি ভেজা
মনটা আমার উড়িয়ে নে যা
কড়াৎ কড়াৎ কড়াৎ জোরে পড়ছে দেখো বাজ।



অদ্ভুতুড়ে

সৈকত কুণ্ডু


আম গাছেতে আম না হয়ে জাম যদি হয় রাতে
চালের উপর তাল হবে ঠিক চাঁদ মেখে খাই ভাতে,
পান্তা জলে  মুখের ছবি
কেমন যেন সুখের কবি
দিনের বেলা অদ্ভুতুড়ে ছন্দ নাচে ছাতে।



ফুল ফুটেছে

বিদ্যুৎ মিশ্র


ফুল ফুটেছে বকুল গাছে তারই সুবাস ভাসে
মৌ মাছিরা দল বেঁধে তাই খিল খিলিয়ে হাসে।
দুটো এসে প্রজাপতি
মধু খেলে নেইতো ক্ষতি
ফড়িংরা তাই জট পাকালো এসে সবুজ ঘাসে।



টুনটুনিটা

মৃত্যুঞ্জয় হালদার


সেদিন দেখি সোনামণি খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে
কী যে কথা কইছে খুকি আলতো আঙুল বাড়িয়ে।
টুনটুনিটার ভাষা
একটু যে তার আশা
আগল ভেঙে দূর আকাশে যায় সে হঠাৎ হারিয়ে।



সুস্থ ভারত 

টুম্পা দে দাস  


দূষণ থেকে আপন দেশকে যদি বাঁচাতে চাও -
তাকে তবে সবুজে সবুজে ভরিয়ে দাও ।
বৃক্ষছেদন বন্ধ করো -
বৃষ্টির জল পাত্রে ভরো। 
'সুস্থ ভারত ' গড়তে সবাই কাঁধে দায়িত্ব নাও ।



বাগানে

মোনালিসা পাহাড়ী


টুনটুনিতে গান ধরেছে মিষ্টি মধুর সুরে
তাইনা শুনে টিয়েপাখি কান্না দিল জুড়ে।
আমবাগানে হুলুস্থুলু
নাচ জুড়েছে তিনটে ভুলু
এসব দেখে হাসছিল এক মিষ্টি ফুল দূরে।



খেলা করি

প্রনব রুদ্র


মাগো,ও মা,বলছি তোমায় একটু শোনো না
ছুটির দিনে এতো পড়া পড়া ভালো লাগে না
এখন এট্টু খেলা করি
দাদুর পিঠে উঠে চড়ি
মাগো,ওমা,আমার সোনা মা,রাগ কোরো না।



গ্যাঁড়াক‌লে

শ‌ফিক শাহ‌রিয়ার 


ভীষণ রকম আট‌কে গে‌ছি হয় না বি‌য়ে-শাদি,
মে‌য়ে রাজী যেমন তেমন হয় না রাজী দাদি।
এ‌কি গ্যাঁড়াক‌লে
বয়স বে‌ড়েই চ‌লে 
বি‌য়ের শা‌ড়ি ‌দি‌তে হ‌বে তা‌রেও ক‌য়েক গাদি।



অপেক্ষা 

রাসেল খান 


কই হারা‌লো আঁধার মাঝে আলোর ঝিকিমিকি ? 
এক মুঠো রোদ আলোর রেখা খুঁজি চারিদিকই 
যায় না থাকা ঘরে 
মনটা কেমন করে
আসবে সুদিন অপেক্ষাতে খোলা চিঠি লিখি।



অনুমান

শ্রীজিৎ জানা


রাবণের মেজ ভাই সাদাসিধে বিভীষণ
একদিন হঠাৎই রাগলেন কি ভীষণ !
মুখপোড়া হনুমান
তার নাকি অনুমান
লঙ্কায় হবে — হরধনু এগজিবিশন ৷



চিন্তায়

বেবী পোদ্দার 


চিন্তায় ঘুম গেল রাজা আর মন্ত্রীর 
বেয়নেট পড়ে যায় হাত থেকে সান্ত্রীর ।
কাঁপে সব থরো থরো 
করোনা নিকেশ করো 
পৃথিবীতে স্থান নেই — এই ষড়যন্ত্রীর ।



বৃষ্টি

জহুরুল ইসলাম 


ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি যখন নামে
কোথায় যাবে পাখি ভয়েই ঘামে
এ ডাল ও ডাল যায়
একটু ছায়া চায়
আবার ওড়ে, বৃষ্টি যখন থামে।



ভালোবাসি

শ্যামল বণিক অঞ্জন


দান করি ছবি তুলি জানুক দেশবাসী :
মানুষের চেয়ে প্রচার বেশি ভালোবাসি !
গরীবের নেতা আমি
হতে চাই নামী দামী
বারবার গরীবের মাঝে তাই আসি ! 



হবই যে নজরুল

প্রবাহনীল দাস


সেই আমাদের ছাতিমগাছে এক থাকে বুলবুল
বন্ধু সেটার হরেক রকম মৌমাছি ভীমরুল,
এক দিন সে বলল সবে,
'একটা কলম কিনতে হবে,
গল্প ছড়া লিখে রে ভাই হবই যে নজরুল'৷



বন্দির আবাস

হীরকশুভ্র পাত্র


ধরণীতে নেমে এল নতুন ভাইরাস
যা থেকে ছড়ালো ভয়াবহ সন্ত্রাস !
নাম তার করোনা
কে তাকে মানে না ?
জীবন এখন শুধু বন্দির আবাস ৷